| | |

ভালোবাসা দিবস ইসলাম কি বলে ২০২৫

ভালোবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইনস ডে) নিয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বহু মতভেদ রয়েছে। ইসলাম ভালোবাসাকে উৎসাহিত করে, তবে তা অবশ্যই নৈতিক ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকা উচিত। ভালোবাসা দিবস পালনের ক্ষেত্রে ইসলামী মূল্যবোধের সাথে এর সামঞ্জস্যতা নিয়ে বহু আলেম বিভিন্ন মত দিয়েছেন।

ভালোবাসা ইসলামে

ইসলাম শান্তি, প্রেম ও সৌহার্দ্যের ধর্ম। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি স্নেহ, এমনকি মানবতার প্রতি মমত্ববোধ ইসলাম বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। আল্লাহ বলেন—

“আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।” (সূরা রূম: ২১)

এই আয়াত স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় যে, প্রকৃত ভালোবাসা হলো হালাল সম্পর্কে। ইসলামে ভালোবাসা কোনো নিষিদ্ধ বিষয় নয়, তবে এর প্রকাশের ধরন ও সীমা রয়েছে।

ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস ও ইসলামের অবস্থান

ভেলেন্টাইনস ডে ভ্যামূলত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের একটি উৎসব, যা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজকের স্মরণে উদযাপন করা হয়। এটি রোমান সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত এবং এতে অনৈতিক প্রেমের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।

অনেক ইসলামিক চিন্তাবিদ ও আলেমরা এই দিবস পালনের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, কারণ—

  1. এর উৎপত্তি অনৈসলামিক সংস্কৃতি থেকে: এটি খ্রিস্টান ঐতিহ্যের অংশ, যা মুসলিমদের সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
  2. বিবাহপূর্ব বা হারাম প্রেমের উস্কানি দেয়: ইসলামে বিবাহপূর্ব সম্পর্ক নিষিদ্ধ, অথচ এই দিনে অবৈধ প্রেম উৎসাহিত করা হয়।
  3. ইসলামের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে: ইসলাম ইতিমধ্যেই ভালোবাসা প্রকাশের সুন্দর ও বৈধ পদ্ধতি প্রদান করেছে, যেমন— বিবাহের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ ও পালন করা।
  4. অপচয় ও অশ্লীলতার প্রসার ঘটে: এই দিনে ফুল, উপহার ও অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় খরচ হয়, যা অপচয়ের মধ্যে পড়ে, যা ইসলামে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

প্রকৃত ভালোবাসা কী হওয়া উচিত?

ইসলামে ভালোবাসা থাকা উচিত—

  • আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য
  • স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ
  • নৈতিক ও হালাল পথ অনুসরণ করে
  • অপচয় ও অশ্লীলতা থেকে মুক্ত

ইসলামি বিকল্প

ভালোবাসা প্রকাশের জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন নেই। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে পারেন যেকোনো দিন, ইসলামী বিধানের মধ্যে থেকে। বরং ইসলামে বিশেষ দিন হিসেবে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা নির্ধারিত রয়েছে, যেখানে পরিবার ও প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ রয়েছে।

উপসংহার

ভালোবাসা একটি স্বাভাবিক ও সুন্দর অনুভূতি, তবে সেটি প্রকাশের সঠিক পথ ও নৈতিকতা থাকা জরুরি। ভালোবাসা দিবস ইসলামী সংস্কৃতির অংশ নয় এবং এটি উদযাপন করা ইসলামের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। তাই একজন মুসলিমের উচিত, হালাল ও শালীন উপায়ে ভালোবাসা প্রকাশ করা এবং ইসলামসম্মত পন্থায় জীবন পরিচালনা করা।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *